• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

হিলি হাসপাতালে বেড়েছে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা   

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪  

উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের হিলিতে জেঁকে বসেছে শীত। কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা ৫ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে। সেই সাথে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। 

হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন বর্হিবিভাগে ৩৫০ থেকে ৩৬০ জন রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে, সেই সাথে ভর্তি হচ্ছেন  ২০ থেকে ৩০ জন রোগি। তবে রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসা দিলেও স্যালাইন কিনতে হচ্ছে বাহির থেকে। এদিকে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছেন, স্যালাইনের সংকট থাকায় রোগিদের দিতে পারছেন না তারা, তবে খুব শীর্ঘই স্যালাইন পাবেন রোগীরা।

সীমান্তবর্তী উপজেলা হিলি হাকিমপুর। এই উপজেলায় জনসংখ্যা রয়েছে ৯২ হাজার ৫শ ৯৯ জন। যেখানে রয়েছে ১ টি পৌরসভা ও ৩টি ইউনিয়ন। এই উপজেলার মানুষ ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা ৫ থেকে ৮ ডিগ্রির মাঝে বিনাজমান করছে। আবহাওয়া তথ্য মতে আজকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ছিল ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছিল।
 
এদিকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। এই উপজেলা ছাড়াও আশপাশের উপজেলা থেকে আসতে শুরু করেছে রোগীরা। তাই হাকিমপুর হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডা জনিত রোগির সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ১ সপ্তাহ থেকে বহিঃবিভাগে বাড়তে শুরু করছে রোগী। প্রতিদিন বর্হিবিভাগে ৩৫০ থেকে ৩৬০ জন রোগি আসছেন চিকিৎসা নিতে, সেই সাথে ভর্তি হচ্ছেন ২০ থেকে ৩০ জন রোগি। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই মাসে রোগি ভর্তির সংখ্যা ৮৩৩ জন।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী বলেন, কয়েকদিনের তুলনায় হিলিতে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। তাই ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। আমি তিনদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। চিকিৎসা মোটামুটি ভালো পাচ্ছি। কিন্তু হাসপাতাল থেকে কোনো স্যালাইন পাচ্ছি না।

রহিমা নামের এক নারী বলেন, কয়েকদিন থেকে অতি শীতের কারনে আমার ছোট বাচ্ছার ডায়রিয়া হয়েছে। আজকে হাসপাতালে এসেছি। তাকে স্যালাইন লাগানো হয়েছে। তবে হাসপাতাল থেকে কোনো স্যালাইন দিচ্ছেন না, বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে আমাদের।

সাইফুল ইসলাম নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমি তিনদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমি শ্বাস কষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছি। ডাক্তাররা চিকিৎসা দিচ্ছেন তবে আগের তুলনায় এখন একটু ভালো আছি।  

হাকিমপুর সাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার প্রিতম মোস্তাহিদ বলেন, উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের হিলিতে জেঁকে বসেছে শীত। এদিকে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন রোগীরা। একই সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মাঝে অনেকটাই কম ছিল। শীতের কারণে বয়স্ক ও শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। তাঁরা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে গরম কাপড় পরিধানসহ ভিটামিন সি ও সুষম খাবার খাওয়া ছাড়াও বয়স্ক ও শিশুদের গরম পানি পান করতে হবে।  

হাকিমপুর উপজেলা সাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, প্রতিদিন এই হাসপাতালে ২০ থেকে ৩০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগি থাকে ১০ থেকে ১২জন। আবার প্রতিদিন ৩৪০ থেকে ৩৫০ জন রোগী আউটডোরে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরেন। ১ জানুয়ারী থেকে ২৯ জানুয়ারী হাসপাতালে ৩২৭ জন রোগি ভর্তি হয়েছেন। আর বর্তমান রোগি ভর্তি রয়েছে ৪৭ জন।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন সংকট থাকায় রোগীদের বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে, তবে অচিরেই এর সমাধান হবে বলে আশ্বাস তার ।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –